Sunday, January 17, 2010

বেহালা

0 comments

অন্যতম শ্রেষ্ট পাশ্চত্য বাদ্যযন্ত্র। ১৬০০ থেকে ১৭৫০ সালের মধ্যে ইটালীর সুনিপুন যন্ত্রবিদগন এই যন্ত্রকে বর্তমান রূপে আনয়ন করেন। এর তার থাকে ৪টি। দুটি তারের, একটি লোহার ও একটি নিকোলের। ডান হাতে ছড়(ধনুক তন্তু) চালিয়ে বাঁ-হাতে ফিঙ্গার বোর্ড বা পটারীতে আঙ্গুল টিপে বেহালা(Violin) বাজাতে হয়। বিদেশ হলেও বর্তমানে এটি প্রায় দেশ বাদ্যযন্ত্রে পরিনত হয়ে গেছে।
যন্ত্র সংগীতে বেহালা একটি জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র। যার সুরের মূর্চ্ছনায় মন হারিয়ে যেতে চায়। যার করুণ সুর সহজেই সবার আবেগকে জাগিয়ে তোলে মায়াবি দোলায়। সিনেমা, নাটক, গান সহ সুরের সকল জগতে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো সহজ সরলভাবে ফুটিয়ে তুলতে বেহালার জুরি মেলা ভার। বেহালার সুর শুনে তাই কখনো মন অজাšেতই কেঁদে উঠে কিংবা দুঃখবোধ জাগ্রত হয়ে উঠে।




বেহালার ইংরেজী নাম ভায়োলিন (ঠরড়ষরহ)। যার সুর শুনে আমরা মুগ্ধ হই, যার সুর শুনে ব্যথায় মন ভরে উঠে সেই যন্ত্রের সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান শিল্পীমনের সকলের জানা উচিত। তবে, আগে পরিস্কার করে নেই যন্ত্র সংগীত চার ধরণের হয়। যার মধ্যে তার দিয়ে তৈরি কিছু বাদ্যযন্ত্র দেখা যায় তাকে সংগীতের ভাষায় বলে তত্ যন্ত্র যেমন বেহালা, গীটার।


বেহালার উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ বেহালাকে ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র, কেউ কেউ আরব যন্ত্র, কেউবা ইউরোপীয় বাদ্যযন্ত্র বলে থাকেন। ভারতীয় মতে, বেহালার উদ্ভব হয়েছে রাবনের আমল থেকে। কারণ প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে লঙ্কাধিপতি রাবন দুই তার বিশিষ্ট একটি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করতেন যা ছিল ঠিক বেহালার মতো। বেহলার সুর বাহুতে লীণ হয়ে যায় বলে ভারতীয়দের মতে বেহালা হচ্ছে বাহুলীণ। আবার অন্য এক মতে দেখা যায় আরবরা যখন স্পেন দখল করে তখন ইউরোপ ও মুসলিম সংস্কৃতির যে ধারা প্রবাহিত হয় সেখানে তিন তার বিশিষ্ট একটি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হতো যা ছিল বেহালার মতো। তাই আরবরা কিংবা মুসলিমরা মনে করে এটি একটি আরবীয় যন্ত্র।


তবে যে যাই মতামত প্রকাশ করুক বর্তমান বেহালার সর্বসম্মত বৈজ্ঞানিক রূপ ধারণে সর্বপ্রথম যিনি বেহালার গঠনশৈলী ও সুরারোপে আকর্ষনীয় ভাব তৈরি করেছেন তিনি হলেন ফ্রান্সের ক্রিমোনা শহরের আন্দ্রে আমেতি। তিনি তৎকালীণ অভিজাত মেডিচি রাজ পরিবারের সহযোগিতায় বেহালার সুরকে আকর্ষণীয় করে গঠন প্রণালীর উন্নতি সাধন করেন। এক্ষেত্রে আন্দ্রে আমেতিকে আধুনিক বেহালার জনক বললে ভুল বলা হবে না। এরপর গবেষণার মাধ্যমে গাণিতিক অনুপাতের সঠিক প্রয়োগে বেহালার বেশ কিছু আঙ্গিকগত উন্নতি করেন আন্দ্রে আমেতির পুত্র অ্যান্টোনিও আমেতি ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার গিরোলামো। এরপর গবেষণায় লিপ্ত থাকেন অ্যান্টোনিও পুত্র প্রথম হিয়েরোনিমাস আমেতি, তাঁর দৌহিত্র নিকোলা আমেতি। আনুমানিক ১৭০০ সালের দিকে বেহালার প্রথম বৈপ বিক উন্নতি সাধন করেন আন্দ্রে আমেতির প্রপৌত্র নিকোলা আমেতির ছাত্র অ্যান্টোনিও স্ট্র্যাডিয়াভ্যারিয়স। এর সাথে সাথে বেহালা বাজাবার যে ছড়ি রয়েছে যাকে ইংরেজীতে বো (ইড়)ি বলে তার উন্নতির কাজ চলতে থাকে। জানা যায় ১৭৮০ সালে প্যারিসের ফ্রাঁসোয়া তুর্তে বেহালার ছড়ির ব্যাপক সংস্কার করেন। যেখানে আমরা বর্তমান বেহালার চিত্র দেখতে পাই।




বেহালার উৎপত্তিতে বিভিন্ন মতামত থাকলেও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বেহালা এশিয়া মহাদেশেই জন্ম লাভ করেছে।


নবম ও একাদশ শতাব্দীতে বেহালা ভায়োলা, ভিয়েলী ইত্যাদি বিভিন্ন নামে প্রচলিত ছিল এবং গিটারের মতো বড় সাইজের ছিল। কিন্তু অষ্টাদশ শতাব্দীর পর বেহালা ধীরে ধীরে ছোট আকারে তৈরি হতে থাকে। যেখানে ছোট বেহালাগুলো ভায়োলিন বা বেহালা নামে সুপরিচিত হয়ে উঠে। ইটালিয়ানরা বেহালাকে বলতো ‘ভায়োলা’, জার্মানরা বলতো ‘গেজ’, ফ্রান্সরা বলতো ‘ভিয়োলন’ (১৫২৩খ্রী:) ও ‘ভায়োলন’(১৫৫৬খ্রী:)। ইটালীতে ১৫৩৮ সালে নামকরণ হয় ‘ভায়োলিনো’ এবং ১৫৭২ সালে ইংল্যান্ডে নামকরণ হয় ‘ভায়োলিন’।


ভায়োলিনের প্রথম বিখ্যাত শিল্পী যাকে বলা হয় তিনি হলেন দএধংঢ়ধৎড় ফর ইবৎঃড়ষড়ঃঃর ফধ ঝধষড়’(১৫৪০-১৫৯০)


বর্তমানে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা পাঁচ তার বিশিষ্ট ভায়োলিন আবিষ্কার করেছেন। যা গত ৪০-৫০ বছর ধরে ভারতে জনপ্রিয়তার সাথে ভায়োলিন যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পঞ্চম তারটি উদারার সপ্তক তার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে বেহালা জনপ্রিয় করার পিছনে যারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন মিয়া, রঘুনাথ দাস, মনছুর আলী, রাজা হোসেন খান, নিতাই দাস(২০ বছর আগে মারা গেছেন)। রঘুনাথ দাস একমাত্র ক্লাসিক্যাল বাজিয়ে থাকেন। তার দেশের বাড়ি রাজশাহীর নাটোরে। অন্য সবাই সাধারণত কর্মাশিয়াল বাজিয়ে থাকেন। এছাড়াও অনেকে আছেন যারা তাদের শ্রমকে নিরলসভাবে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তাই ২০০৯ সালে বেহালার সুরের মূর্চ্ছনায় হারিয়ে যাওয়া জ্ঞান সন্ধানী পাগলদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ভাব। যার সম্পূর্ণ অর্থ হলো বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ভায়োলিন।
ও¯তাদ আলাউদ্দিন মিয়া বাংলাদেশের একজন অন্যতম যন্ত্রশিল্পী। তাঁর জন্ম ১৯৪৬ সালের ৩০ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার অর্šতগত মালপদিয়া গ্রামে। এছাড়াও সিরাজউদ্দিন মিয়া, গিয়াসউদ্দিন মিয়া, চান মিয়া, খলিলুর রহমান, ফজল মিয়া, কামাল এরা সবাই মুন্সিগঞ্জের বেহালা শিল্পী এবং বাংলাদেশের রেডিও ও টেলিভিশনে কর্মরত আছেন।


বেহালা তৈরীর ইতিহাস


বেহালার উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ বেহালাকে ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র, কেউ কেউ আরব যন্ত্র, কেউবা ইউরোপীয় বাদ্যযন্ত্র বলে থাকেন। ভারতীয় মতে, বেহালার উদ্ভব হয়েছে রাবনের আমল থেকে। কারণ প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে লঙ্কাধিপতি রাবন দুই তার বিশিষ্ট একটি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করতেন যা ছিল ঠিক বেহালার মতো। বেহলার সুর বাহুতে লীণ হয়ে যায় বলে ভারতীয়দের মতে বেহালা হচ্ছে বাহুলীণ। আবার অন্য এক মতে দেখা যায় আরবরা যখন স্পেন দখল করে তখন ইউরোপ ও মুসলিম সংস্কৃতির যে ধারা প্রবাহিত হয় সেখানে তিন তার বিশিষ্ট একটি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হতো যা ছিল বেহালার মতো। তাই আরবরা কিংবা মুসলিমরা মনে করে এটি একটি আরবীয় যন্ত্র।




তবে যে যাই মতামত প্রকাশ করুক বর্তমান বেহালার সর্বসম্মত বৈজ্ঞানিক রূপ ধারণে সর্বপ্রথম যিনি বেহালার গঠনশৈলী ও সুরারোপে আকর্ষনীয় ভাব তৈরি করেছেন তিনি হলেন ফ্রান্সের ক্রিমোনা শহরের আন্দ্রে আমেতি। তিনি তৎকালীণ অভিজাত মেডিচি রাজ পরিবারের সহযোগিতায় বেহালার সুরকে আকর্ষণীয় করে গঠন প্রণালীর উন্নতি সাধন করেন। এক্ষেত্রে আন্দ্রে আমেতিকে আধুনিক বেহালার জনক বললে ভুল বলা হবে না। এরপর গবেষণার মাধ্যমে গাণিতিক অনুপাতের সঠিক প্রয়োগে বেহালার বেশ কিছু আঙ্গিকগত উন্নতি করেন আন্দ্রে আমেতির পুত্র অ্যান্টোনিও আমেতি ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার গিরোলামো। এরপর গবেষণায় লিপ্ত থাকেন অ্যান্টোনিও পুত্র প্রথম হিয়েরোনিমাস আমেতি, তাঁর দৌহিত্র নিকোলা আমেতি। আনুমানিক ১৭০০ সালের দিকে বেহালার প্রথম বৈপ্লবিক উন্নতি সাধন করেন আন্দ্রে আমেতির প্রপৌত্র নিকোলা আমেতির ছাত্র অ্যান্টোনিও স্ট্র্যাডিয়াভ্যারিয়স। এর সাথে সাথে বেহালা বাজাবার যে ছড়ি রয়েছে যাকে ইংরেজীতে বো (Bow)বলে তার উন্নতির কাজ চলতে থাকে। জানা যায় ১৭৮০ সালে প্যারিসের ফ্রাঁসোয়া তুর্তে বেহালার ছড়ির ব্যাপক সংস্কার করেন। যেখানে আমরা বর্তমান বেহালার চিত্র দেখতে পাই।


বেহালার উৎপত্তিতে বিভিন্ন মতামত থাকলেও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বেহালা এশিয়া মহাদেশেই জন্ম লাভ করেছে।
নবম ও একাদশ শতাব্দীতে বেহালা ভায়োলা, ভিয়েলী ইত্যাদি বিভিন্ন নামে প্রচলিত ছিল এবং গিটারের মতো বড় সাইজের ছিল। কিন্তু অষ্টাদশ শতাব্দীর পর বেহালা ধীরে ধীরে ছোট আকারে তৈরি হতে থাকে। যেখানে ছোট বেহালাগুলো ভায়োলিন বা বেহালা নামে সুপরিচিত হয়ে উঠে। ইটালিয়ানরা বেহালাকে বলতো ‘ভায়োলা’, জার্মানরা বলতো ‘গেজ’, ফ্রান্সরা বলতো ‘ভিয়োলন’ (১৫২৩খ্রী:) ও ‘ভায়োলন’(১৫৫৬খ্রী:)। ইটালীতে ১৫৩৮ সালে নামকরণ হয় ‘ভায়োলিনো’ এবং ১৫৭২ সালে ইংল্যান্ডে নামকরণ হয় ‘ভায়োলিন’।


ভায়োলিনের প্রথম বিখ্যাত শিল্পী যাকে বলা হয় তিনি হলেন Gasparo di Bertolotti da Salo’(১৫৪০-১৫৯০)


বর্তমানে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা পাঁচ তার বিশিষ্ট ভায়োলিন আবিষ্কার করেছেন। যা গত ৪০-৫০ বছর ধরে ভারতে জনপ্রিয়তার সাথে ভায়োলিন যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পঞ্চম তারটি উদারার সপ্তক তার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।


বাংলাদেশে বেহালা জনপ্রিয় করার পিছনে যারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ও¯তাদ আলাউদ্দিন মিয়া, রঘুনাথ দাস, মনছুর আলী, রাজা হোসেন খান, নিতাই দাস(২০ বছর আগে মারা গেছেন)। রঘুনাথ দাস একমাত্র ক্লাসিক্যাল বাজিয়ে থাকেন। তার দেশের বাড়ি রাজশাহীর নাটোরে। অন্য সবাই সাধারণত কর্মাশিয়াল বাজিয়ে থাকেন। এছাড়াও অনেকে আছেন যারা তাদের শ্রমকে নিরলসভাবে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তাই ২০০৯ সালে বেহালার সুরের মূর্চ্ছনায় হারিয়ে যাওয়া জ্ঞান সন্ধানী পাগলদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ভাব। যার সম্পূর্ণ অর্থ হলো ভায়োলিন এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ।

0 comments:

Post a Comment