ঢোল
ঢোল চর্মাচ্ছাদিত এক প্রকার আনদ্ধ বাদ্যযন্ত্র। এটি বাংলাদেশের অন্যতম লোকবাদ্যযন্ত্র।। বিভিন্ন লোকসঙ্গীতের আসরে ঢোল এক প্রধান বাদ্যযন্ত্র। টাকডুম টাকডুম আওয়াজ শুনলেই বুঝা যায় কোথাও ঢোল বাজছে। ঢোল আর ঢাক অভিন্ন নয়।ঢোল ঢাকের চেয়ে ছোট। কিন্তু উভয় বাদ্যযন্ত্রেরই দুই প্রান্ত চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে। ঢাক বাজানো হয় দু’টি কাঠি দিয়ে একই প্রান্তে। বাংলা ঢোল নামে আরেকটি বাদ্যযন্ত্র আছে। বাংলা ঢোলের আকার সাধারণ ঢোলের চেয়ে বড়। বাংলা ঢোলের আওয়াজ সাধারণ ঢোলের চেয়ে গম্ভীর। এছাড়া ঢোলের চেয়ে ছোট আরেকটি বাদ্যযন্ত্র আছে, যার নাম ঢোলক। ঢোলক দেখতে একটি ছোট পিপার মতো। ঢোলকের দু’দিকের ব্যাস সমান, ঢেকে রাখা চামড়া তুলনামূলকভাবে পাতলা। ঢোলক বাজাতে কোনো কাঠি লাগে না, হাত দিয়েই বাজানো হয়। ঢোলক বেশি ব্যবহৃত হয় নাটক ও যাত্রাপালায়। গজল ও কাওয়ালী গানে ঢোলক এক অপরিহার্য বাদ্যযন্ত্র।
ঢাক ঢোলক
ঢোল যে বাজায় তাকে বলে ঢুলি বা ঢোলি। ঢুলিরা সাধারণত ঢোলের দু’দিকে মোটা রশি বা গামছা বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে ঢোল বাজান। ঢোল বাজাতে ডান হাতে একটি কাঠি ব্যবহার করা হয়। বাম হাতের তালু দিয়ে অন্যপ্রান্ত বাজানো হয়। ঢুলিরা ঢোলের ডান দিক কাঠির বাড়িতে এবং একই সঙ্গে হাতের চাঁটিতে বাম দিকে ঢোল বাজিয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিনয় বাঁশি ভারত উপমহাদেশের একজন সেরা ঢোলবাদক।
ডমরু
ঢোল একটি প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র। মধ্যযুগের বিভিন্ন মঙ্গলকাব্যেও ঢোলের উল্লেখ পাওয়া যায়। পয়লা বৈশাখের লাঠিখেলা, হোলি খেলা, নৌকাবাইচ, কুস্তি, কবিগানের আসর, জারিগান, সারিগান, টপ্পাগান, আলকাপ গান, গম্ভীরা, ছোকরা নাচ, গাজনের গান, বাউলগান, মহররমের শোভাযাত্রা, যাত্রাগান, বিয়ের বরযাত্রা ইত্যাদিতে ঢোল বাজে। হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা ঢোল ছাড়া চলেই না। বিশেষ করে দুর্গাপূজা ও কালীপূজায় ঢোল বাজানো হয়। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, আদিবাসী নির্বিশেষে বিভিন্ন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ঢোল ব্যবহার করে। কয়েক বছর আগেও সরকারি কোনো আদেশ বা পরোয়ানা ঢোল বা ঢেড়া পিটিয়ে বিভিন্ন হাটে-বাজারে ঘোষণা করা হতো। ঢোলের আওয়াজ বহু দূর থেকে শ্রুত হয়।
ঢোল একটি প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র। মধ্যযুগের বিভিন্ন মঙ্গলকাব্যেও ঢোলের উল্লেখ পাওয়া যায়। পয়লা বৈশাখের লাঠিখেলা, হোলি খেলা, নৌকাবাইচ, কুস্তি, কবিগানের আসর, জারিগান, সারিগান, টপ্পাগান, আলকাপ গান, গম্ভীরা, ছোকরা নাচ, গাজনের গান, বাউলগান, মহররমের শোভাযাত্রা, যাত্রাগান, বিয়ের বরযাত্রা ইত্যাদিতে ঢোল বাজে। হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা ঢোল ছাড়া চলেই না। বিশেষ করে দুর্গাপূজা ও কালীপূজায় ঢোল বাজানো হয়। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, আদিবাসী নির্বিশেষে বিভিন্ন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ঢোল ব্যবহার করে। কয়েক বছর আগেও সরকারি কোনো আদেশ বা পরোয়ানা ঢোল বা ঢেড়া পিটিয়ে বিভিন্ন হাটে-বাজারে ঘোষণা করা হতো। ঢোলের আওয়াজ বহু দূর থেকে শ্রুত হয়।
টকিং ড্রাম
নানা প্রয়োজনেই ঢাকের বাজনা বাজিয়ে চলছে বিশ্বের বিভিন্ন জাতির মানুষ। সামাজিক অনুষ্ঠান, যুদ্ধ, খবরের আদান-প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঢাককে আপন করে নিয়েছে সবাই। কোথাও আবার ঢাককে মৃত মানুষের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হতো। আধুনিক পৃথিবীতে ঢাক বেশি ব্যবহার করা হয় বিনোদনের কাজে। তবে ঢোল বা ঢাক হলো বাদন উপকরণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্ভবত ঢাকই হচ্ছে মানুষের জ্ঞাত সবচেয়ে প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র। বেশিরভাগ সংস্কৃতির মানুষ নিজের সুবিধা অনুযায়ী ঢাক তৈরি করে নিয়েছে। কিন্তু সব স্থানের ঢাকের ডিজাইন প্রায় এক। বেশিরভাগ ঢাকের তিনটি মূল অংশ থাকে। ফাঁপা, নলাকা অংশের এক বা দু'দিকেই টান করা পাতলা চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে। ঢেকে রাখা এ অংশকে বলে 'ঢাকের মাথা'। ঢাকের মাথা আবার খোলের সঙ্গে যুক্ত থাকে লম্বা চামড়ার ফালি ও গোলাকার কাঠের টুকরার সঙ্গে।
ড্রামহেড
বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পল্গাস্টিকের 'ড্রামহেড' আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত এ কাজে শুধু পশুর চামড়াই ব্যবহার করা হতো। জাপানিরা শত শত বছর আগে থেকে 'তাইকো' নামের এক ধরনের ঢাক ব্যবহার করে আসছে। আফ্রিকায় এক ধরনের ঢাক, যার নাম 'টকিং ড্রাম' বা কথা বলা ঢাক। আফ্রিকার আদিবাসীরা আগে ঢাকের মাধ্যমে আওয়াজ করে আশপাশের গ্রামগুলোর সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করত। কোনো জরুরি তথ্য ঢাকের মাধ্যমে বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যেত। উত্তর গোলার্ধের বাসিন্দারাও 'হুপ ড্রামস' নামের এক ধরনের ঢাক তৈরি করে। এটা তৈরি করা হয় পাতলা ফ্রেমের ওপর তিমির জিভকে টেনে বসিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় 'স্টিল ড্রাম' নামের এক ধরনের ঢাক ব্যবহার হতো। এটা তৈরি করা হতো যুদ্ধের সময় বাতিল করা তেলের ব্যারেল দিয়ে। উলম্ব আকৃতির এক ধরনের ঢাক আছে, যা তৈরি করা হয় কাঠ বা বাঁশ দিয়ে। এগুলোকে মাটির সঙ্গে আছড়ে বাজাতে হয়।
স্টিল ড্রাম
তাইকো ড্রাম
তাইকো
হুপ ড্রামস
ড্রামস
আধুনিক বিশ্বে ঢাকের চেহারা বদলেছে, ব্যবহার বেড়েছে অনেক। কিন্তু আবেদন কমেনি একটুও।
0 comments:
Post a Comment